মেনু

বুধবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

[বই নোট] হেদায়াত - সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী

[বই নোট] হেদায়াত - সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী

হেদায়াত 

লেখক-সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী, অনুবাদক-মাওলানা আব্দুর রহিম


বই পরিচিতি:  ১৯৫১ সালের ১৩ই নভেম্বর করাচিতে জামায়াতের বার্ষিক সম্মেলনের প্রদত্ত বক্তব্য।
হেদায়াত

আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক:
১. আকীদা-বিশ্বাসের ব্যাপারে আল্লাহর প্রতি ঈমান।
২. ইবাদাতের বেলায় আল্লাহর সাথে নিবিড়তর সম্পর্ক স্থাপন।
৩. নৈতিক চরিত্রে আল্লাহর প্রতি ভয় পোষণ এবং আচার-ব্যবহার ও লেনদেনের বেলায় আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভ করাকেই প্রাধান্য দেয়া দরকার।

আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক স্থাপনের অর্থ:
১. নিজ জীবনের সকল কিছু একমাত্র আল্লাহর জন্য।
২. সকল কাজে একমাত্র আল্লাহকে ভয় করা।
৩. বন্ধুত্বশত্রুতালেনদেন শুধু তার সন্তুষ্টির জন্য।
৪. সকল অবস্থায় শুধু তার উপর ভরসা করা।
৫. নিজের চলার পথকে শুধু আল্লাহর নির্দেশিত সীমায় রাখা।

আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির উপায়: ২টি
১. চিন্তা ও গবেষনা:
ক) নিয়মিত কোরআন,হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন ও এবং সম্পর্কের ধারনা লাভ।
    খ) সম্পর্কের অনুভূতি লাভ এবং সার্বক্ষনিক স্মরন।
গ) নিজ অবস্থায় আত্নসমালোচনা ;সম্পর্কের মান/ দাবী।
 ২. বাস্তব কাজের পন্থা:
ক) সঠিক পথে চলার তীব্র আকাক্ষা।
খ) নিজের আকর্ষনের মান পর্যালোচনাঅভাব দেখা মাত্র পূরনের চেষ্টা করা।
গ) অসৎ সঙ্গ পরিত্যাগ করে সৎ সঙ্গ লাভ।
ঘ) নিজের চেষ্টা ব্যতিত গুনের হ্রাস বৃদ্ধি সম্ভব নয়।
আল্লাহর সাথে সম্পর্কের বিকাশ সাধনের উপকরণ:
        ১. সালাত
২. আল্লাহর যিকর
৩. সাওম
৪. আল্লাহর পথে অর্থ খরচ করা

আল্লাহ তায়ালার সাথে সম্পর্ক যাচাই করার উপায়:
স্বপ্নযোগে অথবা কাশফ,কারামত যাহির করার প্রয়োজন নেইঅন্তরই যথেষ্ট।
যা বিশ্লেষন করতে হবে:
   ১. আল্লাহর সাথে কৃত চুক্তি পূরন করা।
      ২. আল্লাহর দেয়া আমানত রক্ষা করা
      ৩. নিজের স্বার্থে আঘাত লাগলে কেমন লাগে?
      ৪.খোদাদ্রোহীদের তৎপরতা কতটুকু যাতনা সৃষ্টি করে?
বড় কারামত:
     ১. চরম জাহেলিয়াতের মধ্যে অবস্থান করে তাওহীদের নিগুঢ় তত্ব অনুধাবনঅনুধাবন এটাই কারামত।
    ২. আল্লাহর পথে অটল থাকাই মুমিনের জন্য সাফল্যের সংবাদ।
আখেরাতকে অগ্রাধিকার দান: 
একমাত্র আখেরাতের সাফল্য আমাদের লক্ষ্য।

আখেরাতের চিন্তার লালন:
সার্বক্ষনিক অনুভূতির পন্থা -২টি।
১. চিন্তা ও আদর্শমূলক:
     ক) অর্থবুঝে কালামে পাক অধ্যয়ন:
কুরআনের প্রতি পৃষ্ঠায় আখেরাত।
আখেরাতের বিস্তারিত বিবরণ।
স্থায়ী বাসভূমির জন্য অস্থায়ী বাসভূমিতে প্রস্তুতি গ্রহন।
খ) হাদীস অধ্যয়ন ও অনুধাবন:
কুরআনের বিস্তারিত রুপ।
রাসুল সা: কে জানার উপায়।
   # 
রাসুল সা: ও সাহাবীদের ত্যাগ স্মরন
গ) কবর জিয়ারত: মৃতু্কে স্মরন।

পারস্পরিক সংশোধন ও এর পন্থা:
পারস্পরিক সমালোচনার সঠিক পন্থা:
       সকল স্থানে ও সকল সময়ে আলোচনা করা চলবে না বরং বিশেষ বৈঠকে আমীরে জামায়াতের প্রস্তাব কিংবা অনুমতিক্রমেই তা করা যেতে পারে।

        সমালোচনাকারী সর্বপ্রথম আল্লাহ তায়ালাকে হাযির-নাযির জেনে নিজের মনের অবস্থা সম্পর্কে বিচার-বিবেচনা করে দেখবেন যেতিনি সততা ও শুভাকাংক্ষীর বশবর্তী হয়েই সমালোচনা করছেননা কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ এর মূলে সক্রিয় রয়েছে। প্রথমোক্ত অবস্থায় নি:সন্দেহে সমালোচনা করা যেতে পারেঅন্যথায় কোন প্রকার উচ্চবাচ্য না করে নিজের অন্তর হতে এ কালিমা রেখা দূর করার জন্য তার সচেষ্ট হওয়া উচিত।

          সমালোচনার ভঙ্গী ও ভাষা এমন হওয়া উচিতযা শুনে প্রত্যেকেই বুঝতে পারবে যেআপনি সত্যই সংশোধনের বাসনা পোষণ করছেন।

           সমালোচনার উদ্দেশ্যে কথা বলার পূর্বে আপনার অভিযোগের সমর্থনে কোন বাস্তব প্রমাণ আছে কিনা,তা অবশ্যই ভেবে দেখবেন। অহেতুক কারো বিরুদ্ধে কথা বলা অত্যন্ত কঠিন গুনাহএর ফলে সামাজিক জীবনে বিশৃংখলা দেখা দেয়।

             যে ব্যক্তির সমালোচনা করা হবেতার অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে সমালোচকের বক্তব্য শ্রবণ করা এবং সততার সাথে তা ভেবে দেখা কর্তব্য। অভিযোগের যে অংশ সত্যতা অকপটে স্বীকার করা এবং যে অংশ সত্য নয় তা যুক্তি-প্রমাণ দ্বারা খন্ডন করা উচিত। সমালোচনা শুনে রাগান্বিত হওয়া অহংকার ও আত্মম্ভরিতার লক্ষণ।

              সমালোচনা এবং এর জবাবের ধারা সীমাহীনভাবে চলা উচিত নয়কোন এতে একটি স্থায়ী বিরোধ ও কথা কাটাকাটির সূত্রপাত হতে পারে। আলোচনা শুধু উভয় পক্ষের বক্তব্য সুস্পষ্ট না হওয়া পর্যন্তই চলতে পারে। এরপরও যদি বিষয়টির মীমাংসা না হয়তবে আলোচনা সেখানেই স্থগিত রাখুনযেন উভয় পক্ষ ধীরস্থীরভাবে এবং শান্ত মনে নিজেদের বক্তব্য সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করতে পারে।

আনুগত্য ও নিয়ম-শৃঙ্খলা সংরক্ষণ:
জামায়াতের নেতৃবৃন্দের প্রতি উপদেশ:
ক) অহেতুক কর্তাগিরি বা প্রভুত্বের স্বাদ গ্রহন নয়। নম্র ও মধুর ব্যবহার দিয়ে কথা বলতে হবে।
খ) ব্যবহারের ক্রটি কর্মীর মনে বিদ্রোহের জম্ম দিতে পারে।
গ) একই ধারা নয়বরং অবস্থাসুযোগসামর্থ বুঝে কাজ দিতে হবে।

[বই নোট] ভাঙ্গা ও গড়া - সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী

[বই নোট] ভাঙ্গা ও গড়া - সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী
ভাঙ্গা ও গড়া
সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (র:)

বই পরিচিতি:
     ভারত বিভাগের পূবাহ্নে পূর্ব পাঞ্জাবে যে সামপ্রদায়িক দাঙ্গা সংগঠিত হয় তার তিন মাস পূর্বে ১৯৪৭ সালের ১০ ই মে পাঠানকোটের দারুল ইসলামে অনুষ্ঠিত সাধারন সভায় মাওলানা সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (র:) এর প্রদত্ত ভাষণ।
এই বক্তৃতার প্রাদিপাদ্য হিসাবে তিনি স্রষ্টার এই সুন্দর পৃথিবীকে ধ্বংসাত্বক কাজের মাধ্যমে না ভাঙ্গিয়াগঠনমূলক কাজের মাধ্যমে গড়িতে দেশবাসীকে উদ্ধুদ্ধ করেন এবং যাদের গঠনমূলক কাজের যোগ্যতা বেশি প্রাকৃতিকনিয়মের গতিধারায় তাদের হাতেই যে কর্তৃত্ব আসিবেআল্লাহই সেই শ্বাশত বিধান স্মরন করাইয়া দেন।

ভাঙ্গা ও গড়া

ভাঙ্গা ও গড়া বইয়ের বিষয়বস্তু:
মানুষের ভাল মন্দের জন্য আল্লাহ যে নিয়ম-নীতি নির্ধারন করেছেন তা কারোর চেষ্টায় পরিবর্তিত ও বাতিল হতে পারে না। তার ভেতর কারো সঙ্গে শত্রুতা এবং কারো সঙ্গে স্বজনপ্রীতি নেই। আল্লাহ এ আইনের সর্বপ্রথম ও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ধারা হচ্ছে এই যেতিনি গড়া পছন্দ করেন এবং ভাঙ্গা পছন্দ করেন না। সবকিছুরই মালিক হিসাবে তিনি তার দুনিয়াকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে চান।
যে সমস্ত লোক দুনিয়া পরিচালনার ক্ষমতা লাভ করতে চায় তাদের ভেতর থেকে কেবলমাত্র তারাই আল্লাহর দৃষ্টিতে যোগ্যতা সম্পূর্ণ হয়। যারা এ দুনিয়াকে গড়বার যোগ্যতা অন্য সবার চেয়ে বেশি রাখে এরুপ যোগ্যতাসসম্পূণ লোকদেরকেই তিনি দুনিয়া পরিচালনার দায়িত্ব অর্পন করে থাকেন।
অতএব এসব ক্ষমতাসীন লোকেরা কতটুকু ভাঙ্গে এবং কতটুকু গড়ে সেদিকে তিনি তীক্ষ্ন দৃষ্টি রাখেন। যতক্ষন পর্যন্ত তারা ভাঙ্গার চেয়ে গড়তে থাকে বেশি এবং তাদের চেয়ে বেশি গড়ে ও কম ভাঙ্গে এমন কেউ কর্মক্ষেত্রে থাকে নাততক্ষন পর্যন্ত আল্লাহ তাদের সমস্ত দোষ-ক্রটি সত্তেও দুনিয়া পরিচালনার ক্ষমতা তাদের হাতেই রাখেন। কিন্তু যখন তারা গড়ে কম এবং ভাঙ্গে বেশি তখন আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমতাচু্যত করে অন্য লোকদেরকে ঐ একই শর্তে ক্ষমতা দিয়ে থাকেন।
এ ব্যাপারে সব সময়ই মালিকের যে দৃষ্টিভঙ্গি হওয়া উচিতআল্লাহও তাই করে থাকেন। তিনি তার দুনিয়া পরিচালনা করার ক্ষেত্রে দাবীদার ও প্রার্থীদের উত্তরাধিকার অথবা জম্মগত অধিকার দেখেন না। তিনি দেখেন কার গড়ার যোগ্যতা বেশি এবং ভাঙ্গবার দিকে ঝোকপ্রবনতা কম রয়েছে। একই সময়ের প্রার্থীদের মধ্যেযারা এ দিক দিয়ে যোগ্যতার বলে প্রমাণিত হয় তাদেরকেই দেশ পরিচালনার জন্য নির্বাচন করা হয়। যতদিন এদের ধ্বংসাত্বক কাজের চেয়ে গঠনমূলক কাজ বেশি হতে থাকে অথবা এদের তুলনায় বেশি ভাল করে গঠনমূলক কাজ করে এবং ধ্বংসাত্বক কাজও কম করে এমন কেউ এগিয়ে না আসে ততদিন দেশ পরিচালনার ক্ষমতা এদের হাতেই রাখা হয়।

মানব জীবনে যে সব কারনে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয় সেগুলোকে আমরা চার ভাগে ভাগ করতে পারি:
১. আল্লাহকে ভয় না করা।
২. আল্লাহর বিধান মেনে না চলা।
৩. স্বার্থপরতা।
৪. জড়তা ও বিপথগামিতা।

অপরদিকে মানুষের জীবন যেসব উপায়ে সুন্দররুপে গড়ে ওঠে তাকেও চার ভাগে ভাগ করা যায়:
১. আল্লাহ ভীতি
২. আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করা।
৩. মানবতার ব্যবস্থা
৪. সৎ কাজ

এই চারটি বিষয়ের সন্তুষ্টির নাম হচ্ছে গড়া ও সংশোধন। আমাদের ভেতরকার সৎ লোকদের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠনের মধ্যে রয়েছে আমাদের সকলের কল্যান। এ সংগঠন সমস্ত প্রকার ধ্বংসাত্বক কাজ ও ভাঙ্গনের পথ বন্ধ করবে এবং উল্লেখিত উপায়ে গঠনমূলক কাজের মাধ্যমে অবিরাম গড়ার প্রচেষ্টা চালাবে। এ প্রচেষ্টা এ দেশবাসীকে সঠিক পথে আনতে সফল হলেও আল্লাহ দেশের শাসন ক্ষমতা অযথা দেশের অধিবাসীদের কাছে থেকে ছিনিয়ে নিয়ে অন্যকে দিয়ে দিবেন এমন অবিচারক তিনি নন। কিন্তু যদি এতে সফলকাম না হওয়া যায় তাহলে আমাদেরআপনাদের ও সমস্ত দেশবাসীর পরিনাম কি হবে তা বলা যায় না

রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

[পিডিএফ] ইরান বিপ্লব: একটি পর্যালোচনা - মুহাম্মদ সালাহুদ্দীন

[পিডিএফ] ইরান বিপ্লব: একটি পর্যালোচনা  - মুহাম্মদ সালাহুদ্দীন

ইরানী বিপ্লব(যা ইসলামি বিপ্লব বা ১৯৭৯ সালের বিপ্লব নামেও পরিচিত)  হচ্ছে ১৯৭৯ সালে ঘটা একটি যুগান্তকারী বিপ্লব যেটা ইরানকে পাশ্চাত্যপন্থি দেশ থেকে ইসলামি প্রজাতন্ত্রে পরিণত করে। এ বিপ্লবকে বলা হয় ফরাসি এবং বলশেভিক বিপ্লবের পর ইতিহাসের তৃতীয় মহান বিপ্লব।

ইরান বিপ্লব: একটি পর্যালোচনা


৪০ বছর আগে আয়াতোল্লাহ খোমেনি ফ্রান্সে তার নির্বাসিত জীবন থেকে দেশে ফিরে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল সেটি। প্যারিসের বাইরে নফলে-ল্য শাতো নামের গ্রামটিতে থাকতেন আয়াতোল্লাহ খোমেনি। সেখানে বসেই ইরানে তার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন। গত ৪০ বছরে গ্রামটির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। শুধু আয়াতোল্লার প্রস্থানের কিছুদিন পরেই তার আস্তানাটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল। নফেলের তেমন পরিবর্তন না হলেও গত ৪০ বছরে এই গ্রামের বাইরের বিশ্ব অনেক বদলে গেছে। এবং চার দশক আগে এই গ্রামে নীরবে নিভৃতে যা হয়েছিল, বিশ্বের পরিবর্তনের পেছনে তার ভূমিকা অনেক। ভুল সিদ্ধান্ত এবং বিপর্যয় ১৯৭৮ সালে ইরানে যখন চরম অস্থিরতা এবং সহিংসতা শুরু হয়, আয়াতোল্লাহ খোমেনি তখন ইরাকে শিয়াদের পবিত্র নগরী নাজাফে কড়া পাহারায় নির্বাসিত জীবনে ছিলেন।
Titleইরান বিপ্লব: একটি পর্যালোচনা
Authorমুহাম্মদ সালাহুদ্দীন
Publisherশহীদ স্মৃতি প্রকাশনী
Downloadবইটি ডাউনলোড করুন

মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২২

[পিডিএফ] রিয়াদুস সালেহীন ২য় খন্ড - ইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী (রহ)

[পিডিএফ] রিয়াদুস সালেহীন ২য় খন্ড  - ইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী (রহ)

 "রিয়াদুস সালেহীন ২য় খণ্ড "বইটির প্রসঙ্গে কিছু কথা:

প্রায় সাড়ে চৌদ্দ শত বছর পরেও আল কুরআন সম্পূর্ণ অপরিবর্তিত ও অবিকৃত অবস্থায় আমাদের সামনে রয়ে গেছে। ঠিক তেমনি হাদীসের ব্যাপারেও পরিপূর্ণ জোরের সাথে এ কথা বলা যায়। হাদীস বিকৃত করার বহুতর অপচেষ্টা চালানাে হয়েছে। কিন্তু উম্মতে মুহাম্মাদী অসাধারণ পরিশ্রম, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও ত্যাগের বিনিময়ে সত্য, নির্ভুল ও যথার্থ হাদীসগুলােকে বাছাই করে সংরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়েছে। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মাত ছাড়া অন্য কোনাে নবীর উম্মাত তাদের নবীর সমগ্র জীবন প্রণালী, বাণী, কার্যক্রম, কর্মতৎপরতা এবং তাঁর প্রতি মুহুর্তের চলাফেরা, প্রতিটি পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত এমন নিষ্ঠা সহকারে নির্ভুলভাবে সংরক্ষণ করার চেষ্টা করেনি। রাসূলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবনকাল থেকে হাদীস লেখা হতে থাকে। তাঁর তিরােধানের দুই-তিন শত বছরের মধ্যেই সমস্ত হাদীস যাচাই হয়ে নির্ভুলভাবে লিপিবদ্ধ হয়ে আসে। প্রথম দিকে তাবিঈ ও তাবে-তাবিঈগণ বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিতে পৃথক পৃথক গ্রন্থাকারে হাদীস লিপিবদ্ধ করতে থাকেন। এগুলােকে জামে ও সুনান বলা হয়। এভাবে অনেকগুলাে মৌলিক হাদীগ্রন্থ রচিত হয়। এরপর একদল মুহাদ্দিস এগিয়ে আসেন। তাঁরা কেউ সাহাবীদের নাম অনুসারে হাদীসগুলােকে সাজান এবং এক একজন সাহাবী বর্ণিত হাদীসগুলােকে এক এক অধ্যায়ে স্থান দেন। আবার কেউ নিজের উস্তাদ অর্থাৎ সর্বশেষ রাবীর নাম অনুসারে হাদীসগুলাে সাজান। আবার একদল মুহাদ্দিস এক এক বিষয়ের হাদীসগুলাে এক একটি বিভাগে লিপিবদ্ধ করেন। এগুলােকে বলা হয় যথাক্রমে মুসনাদ, মু'জাম ও রিসালাহ। এগুলাে সবই হাদীসের মৌলিক গ্রন্থ। অতঃপর একদল মুহাদ্দিস বিভিন্ন নির্ভরযােগ্য হাদীস গ্রন্থ থেকে বিষয় ভিত্তিক হাদীস সংকলন করার কাজে আত্মনিয়ােগ করেন। এই সংকলনগুলির মধ্যে ইমাম নববীর রিয়াদুস সালেহীন অনন্য সাধারণ মর্যাদার অধিকারী।

রিয়াদুস সালেহীন ২য় খন্ড pdf


রিয়াদুস সালেহীনের বৈশিষ্ট্য
ইমাম নববী (র) তাঁর দীর্ঘদিনের পরিশ্রম ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে এ গ্রন্থটি প্রণয়ন করেন। সিহাহ সিত্তাহসহ আরাে কয়েকটি প্রথম পর্যায়ের নির্ভরযােগ্য হাদীস গ্রন্থ থেকে তিনি এই হাদীসগুলাে আহরণ করেছেন। রিয়াদুস সালেহীনে কোননা প্রকার যঈফ হাদীসের স্থান নেই। এক একটি বিষয়ের হাদীসের জন্য এক একটি অনুচ্ছেদের শুরুতে প্রথমে উল্লেখিত বিষয় সম্পর্কিত আল কুরআনের বিভিন্ন আয়াত সংযুক্ত করা হয়েছে, তারপর উদ্ধৃত হয়েছে সেই বিষয় সম্পর্কিত প্রামাণ্য হাদীসগুলাে। হাদীসের শেষে হাদীসের নির্ভরযােগ্যতা কোন পর্যায়ের তা বর্ণনা করা হয়েছে এবং এই সংগে হাদীসের কিছুটা ব্যাখ্যাও সংযুক্ত করা হয়েছে।
আমাদের জীবনের দৈনন্দিন বিষয়গুলাে সম্পর্কিত চমকপ্রদ হাদীসগুলাে এমন যাদুকরী পদ্ধতিতে এখানে সংযােজিত হয়েছে যার ফলে সেগুলাে অধ্যয়ন করার সাথে সাথেই মনোেযােগী পাঠকের মনের গভীরতম প্রদেশে ব্যাপক আলােড়ন সৃষ্টি করে এবং কোনাে আগ্রহী পাঠক তার প্রভাব গ্রহণ না করে থাকতে পারেনা। অধ্যায়ের শুরুতে আল কুরআনের আয়াত এবং তারপর বিষয় সংশ্লিষ্ট হাদীসের বর্ণনা থেকে বুঝা যায় যে, আল কুরআনের সাথে হাদীসের সম্পর্ক কত গভীর। হাদীস যে আল কুরআনেরই ব্যাখ্যা এ কথা সুস্পষ্টভাবে এখানে প্রমাণিত হয়। হাদীসের সাহায্য ছাড়া আল কুরআনের সঠিক অর্থ অনুধাবন করা।
Titleরিয়াদুস সালেহীন ২য় খন্ড
Authorইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী (রহ)
Publisherবাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার
Downloadবইটি ডাউনলোড করুন

[পিডিএফ] রিয়াদুস সালেহীন ১ম খন্ড - ইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী (রহ)

[পিডিএফ] রিয়াদুস সালেহীন ১ম খন্ড  - ইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী (রহ)

"রিয়াদুস সালেহীন ১ম খণ্ড "বইটির প্রসঙ্গে কিছু কথা:
প্রায় সাড়ে চৌদ্দ শত বছর পরেও আল কুরআন সম্পূর্ণ অপরিবর্তিত ও অবিকৃত অবস্থায় আমাদের সামনে রয়ে গেছে। ঠিক তেমনি হাদীসের ব্যাপারেও পরিপূর্ণ জোরের সাথে এ কথা বলা যায়। হাদীস বিকৃত করার বহুতর অপচেষ্টা চালানাে হয়েছে। কিন্তু উম্মতে মুহাম্মাদী অসাধারণ পরিশ্রম, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও ত্যাগের বিনিময়ে সত্য, নির্ভুল ও যথার্থ হাদীসগুলােকে বাছাই করে সংরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়েছে। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মাত ছাড়া অন্য কোনাে নবীর উম্মাত তাদের নবীর সমগ্র জীবন প্রণালী, বাণী, কার্যক্রম, কর্মতৎপরতা এবং তাঁর প্রতি মুহুর্তের চলাফেরা, প্রতিটি পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত এমন নিষ্ঠা সহকারে নির্ভুলভাবে সংরক্ষণ করার চেষ্টা করেনি। রাসূলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবনকাল থেকে হাদীস লেখা হতে থাকে। তাঁর তিরােধানের দুই-তিন শত বছরের মধ্যেই সমস্ত হাদীস যাচাই হয়ে নির্ভুলভাবে লিপিবদ্ধ হয়ে আসে। প্রথম দিকে তাবিঈ ও তাবে-তাবিঈগণ বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিতে পৃথক পৃথক গ্রন্থাকারে হাদীস লিপিবদ্ধ করতে থাকেন। এগুলােকে জামে ও সুনান বলা হয়। এভাবে অনেকগুলাে মৌলিক হাদীগ্রন্থ রচিত হয়। এরপর একদল মুহাদ্দিস এগিয়ে আসেন। তাঁরা কেউ সাহাবীদের নাম অনুসারে হাদীসগুলােকে সাজান এবং এক একজন সাহাবী বর্ণিত হাদীসগুলােকে এক এক অধ্যায়ে স্থান দেন। আবার কেউ নিজের উস্তাদ অর্থাৎ সর্বশেষ রাবীর নাম অনুসারে হাদীসগুলাে সাজান। আবার একদল মুহাদ্দিস এক এক বিষয়ের হাদীসগুলাে এক একটি বিভাগে লিপিবদ্ধ করেন। এগুলােকে বলা হয় যথাক্রমে মুসনাদ, মু'জাম ও রিসালাহ। এগুলাে সবই হাদীসের মৌলিক গ্রন্থ। অতঃপর একদল মুহাদ্দিস বিভিন্ন নির্ভরযােগ্য হাদীস গ্রন্থ থেকে বিষয় ভিত্তিক হাদীস সংকলন করার কাজে আত্মনিয়ােগ করেন। এই সংকলনগুলির মধ্যে ইমাম নববীর রিয়াদুস সালেহীন অনন্য সাধারণ মর্যাদার অধিকারী।

রিয়াদুস সালেহীন ১ম খন্ড pdf


রিয়াদুস সালেহীনের বৈশিষ্ট্য
ইমাম নববী (র) তাঁর দীর্ঘদিনের পরিশ্রম ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে এ গ্রন্থটি প্রণয়ন করেন। সিহাহ সিত্তাহসহ আরাে কয়েকটি প্রথম পর্যায়ের নির্ভরযােগ্য হাদীস গ্রন্থ থেকে তিনি এই হাদীসগুলাে আহরণ করেছেন। রিয়াদুস সালেহীনে কোননা প্রকার যঈফ হাদীসের স্থান নেই। এক একটি বিষয়ের হাদীসের জন্য এক একটি অনুচ্ছেদের শুরুতে প্রথমে উল্লেখিত বিষয় সম্পর্কিত আল কুরআনের বিভিন্ন আয়াত সংযুক্ত করা হয়েছে, তারপর উদ্ধৃত হয়েছে সেই বিষয় সম্পর্কিত প্রামাণ্য হাদীসগুলাে। হাদীসের শেষে হাদীসের নির্ভরযােগ্যতা কোন পর্যায়ের তা বর্ণনা করা হয়েছে এবং এই সংগে হাদীসের কিছুটা ব্যাখ্যাও সংযুক্ত করা হয়েছে।
আমাদের জীবনের দৈনন্দিন বিষয়গুলাে সম্পর্কিত চমকপ্রদ হাদীসগুলাে এমন যাদুকরী পদ্ধতিতে এখানে সংযােজিত হয়েছে যার ফলে সেগুলাে অধ্যয়ন করার সাথে সাথেই মনোেযােগী পাঠকের মনের গভীরতম প্রদেশে ব্যাপক আলােড়ন সৃষ্টি করে এবং কোনাে আগ্রহী পাঠক তার প্রভাব গ্রহণ না করে থাকতে পারেনা। অধ্যায়ের শুরুতে আল কুরআনের আয়াত এবং তারপর বিষয় সংশ্লিষ্ট হাদীসের বর্ণনা থেকে বুঝা যায় যে, আল কুরআনের সাথে হাদীসের সম্পর্ক কত গভীর। হাদীস যে আল কুরআনেরই ব্যাখ্যা এ কথা সুস্পষ্টভাবে এখানে প্রমাণিত হয়। হাদীসের সাহায্য ছাড়া আল কুরআনের সঠিক অর্থ অনুধাবন করা।
Titleরিয়াদুস সালেহীন ১ম খন্ড
Authorইমাম মুহিউদ্দীন ইয়াহইয়া আন-নববী (রহ)
Publisherবাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার
Downloadবইটি ডাউনলোড করুন

শনিবার, ২২ জানুয়ারী, ২০২২

[দারসুল কুরআন] তওবা : মহান আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার অনন্য সোপান

[দারসুল কুরআন] তওবা : মহান আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার অনন্য সোপান

 বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

ড. মুহা. রফিকুল ইসলাম

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَّصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ يَوْمَ لَا يُخْزِي اللَّهُ النَّبِيَّ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ ۖ نُورُهُمْ يَسْعَىٰ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا ۖ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর কাছে তওবা করো, প্রকৃত তওবা। আশা করা যায়, আল্লাহ তোমাদের দোষত্রুটিসমূহ দূর করে দিবেন এবং এমন জান্নাতে প্রবেশ করবেন যারা পাদদেশ দিয়ে ঝরনাসমূহ প্রবাহিত৷ সেদিন আল্লাহ নবী এবং নবীর সঙ্গী ঈমানদারদের লাঞ্ছিত করবেন না৷ তাদের ‘নূর’ তাদের সামনে ও ডান দিকে দ্রুত অগ্রসর হতে থাকবে এবং তারা বলতে থাকবে, হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের ‘নূর’ পূর্ণাঙ্গ করে দাও ও আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও৷ নিশ্চয় তুমি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান ৷ (সূরা আত-তাহরিম : ৮)

হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর কাছে তওবা করো, প্রকৃত তওবা। আশা করা যায়, আল্লাহ তোমাদের দোষত্রুটিসমূহ দূর করে দিবেন এবং এমন জান্নাতে প্রবেশ করবেন যারা পাদদেশ দিয়ে ঝরনাসমূহ প্রবাহিত৷ সেদিন আল্লাহ নবী এবং নবীর সঙ্গী ঈমানদারদের লাঞ্ছিত করবেন না৷ তাদের ‘নূর’ তাদের সামনে ও ডান দিকে দ্রুত অগ্রসর হতে থাকবে এবং তারা বলতে থাকবে, হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের ‘নূর’ পূর্ণাঙ্গ করে দাও ও আমাদেরকে ক্ষমা করে দাও৷ নিশ্চয় তুমি সব কিছুর ওপর সর্বশক্তিমান ৷ (সূরা আত-তাহরিম : ৮)

নামকরণ
সূরার প্রথমে আয়াতের ‘লিমা তুহাররিমু’ শব্দ থেকে এর নাম গৃহীত। তাহরিম অর্থ হারাম করা। এ নামের অর্থ হচ্ছে, এ সূরার মধ্যে একটি হালাল জিনিসকে হারাম করার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।

নাযিলের সময়
রাসূল সা.-এর মাদানি জীবনের তৃতীয় ভাগে হিজরি ৭ম থেকে ৮ম সালের কোনো এক সময়ে এ সূরা নাযিল হয়।

আলোচ্য বিষয়
উম্মুল মু‘মিনীন যয়নব রা.-এর ঘরে থাকা রাসূল সা.-এর প্রিয় বিশেষ এক ধরনের মধুর শরবত পান করার ব্যাপারে এবং অন্যান্য উম্মাহাতুল মু‘মিনীনদের ইচ্ছা অনুযায়ী তা না খাওয়ার ফয়সালা করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সূরা অবতীর্ণ হয়। এ ছাড়াও এ সূরায় নবীর মর্যাদা, নবীর স্ত্রীগণের দায়িত্ববোধ, তাওবাতুন নাসুহা বা খাঁটি তওবা ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান দান করা হয়েছে। শেষ দিকে নবীর ঘরে কাফির স্ত্রী এবং কাফিরের ঘরে মুমিন স্ত্রীর দৃষ্টান্ত দিয়ে দেখানো হয়েছে মানুষ যে অবস্থা থাকুক, তার হেদায়াত হওয়া তার ওপরই নির্ভর করে।

ফজিলত
নবী করিম সা. বলেছেন : مَنْ قرأَ سورةَ التحريمِ آتاهُ الله توبةً نصوحاً -‘যে ব্যক্তি সূরা তাহরিম তেলাওয়াত করবে মহান আল্লাহ তাকে প্রকৃত তওবা নসিব করবেন।’

ব্যাখ্যা
অত্র আয়াতে মহান আল্লাহ মুমিনদের নসিহত করেছেন। কালামে হাকিমের যত স্থানে ঈমানদার ব্যক্তিদের আহবান করা হয়েছে, সকল স্থানে মুমিনদের নাজাত এবং সফলতা অর্জনের জন্য নানাধরনের পরামর্শ, নির্দেশ এবং কৌশল বলে দেয়া হয়েছে। এ আয়াত তার ব্যতিক্রম নয়।

আয়াতের প্রথম অংশ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَّصُوحًا ‘হে ঈমানদারগণ, আল্লাহর কাছে তওবা করো, প্রকৃত তওবা’- প্রকৃত বা খাঁটি তওবা কী? এর ব্যাখ্যায় ইবন কাসির র. বলেন,
أَيْ تَوْبَة صَادِقَة جَازِمَة تَمْحُو مَا قَبْلهَا مِنْ السَّيِّئَات وَتَلُمّ شَعَثَ التَّائِب وَتَجْمَعُهُ وَتَكُفُّهُ عَمَّا كَانَ يَتَعَاطَاهُ مِنْ الدَّنَاءَات
অর্থাৎ সত্য, একনিষ্ঠ ও খাঁটি তওবা যার ফলে তোমাদের পূর্ববর্তী পাপসমূহ ক্ষমা করা হবে এবং তওবাকারীর বিক্ষিপ্ত ও এলোমেলো ভাবনাগুলো একত্রিত করা হবে এবং মন্দ স্বভাবসমূহ দূর হয়ে যাবে।

তাওবা নসুহার ব্যাখ্যায় তাফহিম প্রণেতা বলেন: আরবি ভাষায় ( نَصَحَ) শব্দের অর্থ নিষ্কলুষতা ও কল্যাণকামিতা। খাঁটি মধু যা মোম ও অন্যান্য আবর্জনা থেকে মুক্ত করা হয়েছে তাকে আরবিতে (عَسَلٌ ناصِحٌ) বলা হয়। ছেঁড়া কাপড় সেলাই করে দেয়া এবং ফাটা ফাটা কাপড় ঠিক করে দেয়া বুঝাতে আরবি (نَصَّاحَةُ الثَّوب) শব্দ ব্যবহার করা হয় । অতএব, তওবা শব্দের সাথে نَصُوح বিশেষণ যুক্ত করলে হয় তার আভিধানিক অর্থ হবে এমন তওবা যার মধ্যে প্রদর্শনী বা মুনাফিকির লেশমাত্র নেই। অথবা তার অর্থ হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিজের কল্যাণ কামনা করবে এবং গোনাহ থেকে তওবা করে নিজেকে মন্দ পারিণাম থেকে রক্ষা করবে। অথবা তার অর্থ হবে গোনাহর কারণে তার দীনদারির মধ্যে যে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে তওবা দ্বারা তা সংশোধন করবে। অথবা সে তওবা করে নিজের জীবনকে এমন সুন্দর করে গড়ে তুলবে যে, অন্যের জন্য সে উপদেশ গ্রহণের কারণ হবে এবং তাকে দেখে অন্যরাও তার মত নিজেদেরকে সংশোধন করে নেবে।

তাওবা নাসুহার আরো বিস্তারিত অর্থ হলো, ইবনে হুবাইশ বলেন, আমি উবাই ইবনে কাবের (রা) কাছে ‘তাওবায়ে নাসূহ’ এর অর্থ জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একই প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি বললেন, ” النَّدَمُ تَوْبَة ” এর অর্থ হচ্ছে, অনুশোচনা বা লজ্জাবোধই তওবা। তারপর লজ্জিত হয়ে সে জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং ভবিষ্যতে আর কখনো ঐ কাজ করো না। হযরত উমর (রা), হযরত আবদুল্লাহ (রা) ইবনে মাসউদ, ইবন জারির, ইবনুল কায়্যিম ও উবাই ইবনুল কাব (রা) ‘তাওবায়ে নাসূহ’র পরিচয়ে বলেন :
أَنْ يَتُوب مِنْ الذَّنْب ثُمَّ لَا يَعُود اليه، كما لا يَعُود اللبن إلى الضرع
পাপ থেকে তওবা করা অতঃপর সে পাপের কাছে আর যাবে না, যেমন দুধ পশুর স্তনে ফিরে যেতে পারে না। (ইবনে জারির)

হযরত আলী (রা) একবার এক বেদুঈনকে মুখ থেকে ঝটপট করে তওবা ও ইসতিগফারের শব্দ উচ্চারণ করতে দেখে বললেন, এতো মিথ্যাবাদীদের তওবা। সে জিজ্ঞেস করলো, তাহলে সত্যিকার তওবা কী? তিনি বললেন, সত্যিকার তওবার সাথে ছয়টি বিষয় থাকতে হবে তা হচ্ছে:
(১) যা কিছু ঘটেছে তার জন্য লজ্জিত হও। (২) নিজের যে কর্তব্য ও করণীয় সম্পর্কে গাফিলতি করছ তা সম্পাদন কর। (৩) যার হক নষ্ট করেছ তা ফিরিয়ে দাও। (৪) যাকে কষ্ট দিয়েছ তার কাছে মাফ চাও। (৫) প্রতিজ্ঞা করো ভবিষ্যতে এ গোনাহ আর করবে না এবং (৬) নফসকে এতদিন পর্যন্ত যেভাবে গোনাহর কাজে অভ্যস্ত করেছ ঠিক তেমনিভাবে আনুগত্যে নিয়োজিত কর। এতদিন পর্যন্ত নফসকে যেভাবে আল্লাহর অবাধ্যতার মজায় নিয়োজিত রেখেছিলে এখন তাকে তেমনি আল্লাহর আনুগত্যের তিক্ততা আস্বাদন করাও (কাশশাফ)।

হযরত হাসান রা. বলেন,
التَّوْبَة النَّصُوح أَنْ تُبْغِض الذَّنْب كَمَا أَحْبَبْته وَتَسْتَغْفِرَ مِنْهُ إِذَا ذَكَرْته فَأَمَّا إِذَا جَزَمَ بِالتَّوْبَةِ وَصَمَّمَ عَلَيْهَا فَإِنَّهَا تَجُبُّ مَا قَبْلهَا مِنْ الْخَطِيئَات
বিশুদ্ধ তওবা হলো এই যে, যেমন গুনাহর প্রতি ভালোবাসা ও আকর্ষণ ছিল ঐ রকমই তার প্রতি অন্তরে ঘৃণা জন্মে যাওয়া। যখন ঐ গুনাহর কথা স্মরণ হয়, তখন ক্ষমা প্রার্থনা করা। যখন কোন বান্দা তওবা করার জন্য দৃঢ় সংকল্প করে নেয় এবং তওবার ওপর অটল থাকে, তখন মহান আল্লাহ তার পূর্বের সমস্ত গুণাহ মাফ করে দেন।
ইমাম গাজজালী র. তওবায়ে নাসুহার জন্য তিনটি উপাদানের কথা বলেছেন। ঐ তিন উপাদানের সমন্বয় হচ্ছে খাঁটি তওবা। উক্ত বিষয়গুলো হচ্ছে-

১. তওবা সম্পর্কে ‘ইলম’ বা জ্ঞান থাকা। তওবাকারী গুনাহ সম্পর্কে জানবে এবং তা যে মাফ হতে পারে বা মহান আল্লাহ মাফ করতে পারেন তাও তার জানা থাকতে হবে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন,
قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا ۚ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
(হে নবী,) বলে দাও, হে আমার বান্দারা যারা নিজের আত্মার ওপর জুলুম করেছো আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না৷ নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন৷ তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু৷ (সূরা আল যুমার : ৫৩)
মহান আল্লাহ আরও বলেন,
وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ وَمَن يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا اللَّهُ وَلَمْ يُصِرُّوا عَلَىٰ مَا فَعَلُوا وَهُمْ يَعْلَمُونَ
আর যারা কখনো কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা কোন গোনাহের কাজ করে নিজেদের ওপর জুলুম করে বসলে আবার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর কথা স্মরণ হয়ে তাঁর কাছে নিজেদের গোনাহ খাতার জন্য মাফ চায়- কারণ আল্লাহ ছাড়া আর কে গোনাহ মাফ করতে পারেন এবং জেনে বুঝে নিজেদের কৃতকর্মের ওপর জোর দেয় না। (সূরা আলে ইমরান : ১৩৫)

২. তওবার সময় ব্যক্তির মানসিক অবস্থা, যা তার আবেগ অনুভূতির সাথে সম্পৃক্ত সে সম্পর্কে জানা থাকা।
ক. পাপ করার পর ব্যক্তির তীব্র দংশন, মানসিক আঘাত ও যাতনা তৈরি হবে। মনে হবে দুনিয়ায় তার সবকিছু থেকেও নেই। এ ধরনের কষ্ট, আঘাত ও মনোযাতনা তৈরি হবে। এর চিত্রায়ণে মহান আল্লাহ বলেন,
وَعَلَى الثَّلَاثَةِ الَّذِينَ خُلِّفُوا حَتَّىٰ إِذَا ضَاقَتْ عَلَيْهِمُ الْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ وَضَاقَتْ عَلَيْهِمْ أَنفُسُهُمْ وَظَنُّوا أَن لَّا مَلْجَأَ مِنَ اللَّهِ إِلَّا إِلَيْهِ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ لِيَتُوبُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيم
আর যে তিনজনের ব্যাপার মুলতবি করে দেয়া হয়েছিল তাদেরকেও তিনি মাফ করে দিয়ছেন পৃথিবী তার সমগ্র ব্যাপকতা সত্ত্বেও যখন তাদের জন্য সংকীর্ণ হয়ে গেলো, তাদের নিজেদের প্রাণও তাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ালো এবং তারা জেনে নিল যে, আল্লাহর হাত থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিজের রহমতের আশ্রয় ছাড়া আর কোন আশ্রয়স্থল নেই, তখন আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের দিকে ফিরলেন যাতে তারা তার দিকে ফিরে আসে। অবশ্যি আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়। (সূরা আত তাওবা : ১১৮)
তাঁর অনুশোচনা এমন হবে সে নিজেই মহান আল্লাহর কাছে অনবরত মাফ চাইতে থাকবে। যেমন আদম আ. ও হাওয়া রা. গাছের ফল খেয়ে অনুশোচনা করেছিলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন:
قَالَا رَبَّنَا ظَلَمْنَا أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
তারা দু’জন বলে উঠলো : “হে আমাদের রব! আমরা নিজেদের ওপর জুলুম করেছি৷ এখন যদি তুমি আমাদের ক্ষমা না করো, এবং আমাদের প্রতি রহম না করো, তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো৷” (সূরা আল আরাফ : ২৩)
হুদ আ. যেমনিভাবে অত্যন্ত বিনয়সহকারে অসহায়ের মত কাকুতি-মিনতি করে অনুশোচনা করে বলেছিলেন, তেমনি বিনয় ও কাতরতার সাথে আবেগ-অনুভূতির মিশ্রণে তওবা করতে হবে। আল কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,
قَالَ رَبِّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَسْأَلَكَ مَا لَيْسَ لِي بِهِ عِلْمٌ ۖ وَإِلَّا تَغْفِرْ لِي وَتَرْحَمْنِي أَكُن مِّنَ الْخَاسِرِينَ
নূহ তখনই বললো, “হে আমার রব! যে জিনিসের ব্যাপারে আমার জ্ঞান নেই তা তোমার কাছে চাইবো- এ থেকে আমি তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি৷ যদি তুমি আমাকে মাফ না করো এবং আমার প্রতি রহমত না করো তাহলে আমি ধ্বংস হয়ে যাবো৷” (সূরা আল হুদ : ৪৭)

খ. সুদৃঢ় সঙ্কল্প গ্রহণ। অর্থাৎ তওবার প্রাক্কালে অত্যন্ত একনিষ্ঠ, দৃঢ় ও শক্তভাবে এমন ওয়াদা করা যাতে কোন অবস্থায় কোনোভাবেই আর ঐ পাপ করার সামান্যতম অনুভূতি আর তৈরি না হয়। তওবাকারী অনুশোচনা করবে এবং সংকল্পবদ্ধ হবে ভবিষ্যতে নতুন করে আর পাপাচার করবে না। এর পাশাপাশি সে তার এ সত্য তওবা কবুল হওয়া থেকে নিরাশ হবে না। এ ধরনের ব্যক্তির ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন,
رَّبُّكُمْ أَعْلَمُ بِمَا فِي نُفُوسِكُمْ ۚ إِن تَكُونُوا صَالِحِينَ فَإِنَّهُ كَانَ لِلْأَوَّابِينَ غَفُورًا
তোমাদের রব খুব ভালো করেই জানেন তোমাদের মনে কী আছে৷ যদি তোমরা সৎকর্মশীল হয়ে জীবন যাপন করো, তাহলে তিনি এমন লোকদের প্রতি ক্ষমাশীল যারা নিজেদের ভুলের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে বন্দেগির নীতি অবলম্বন করার দিক ফিরে আসে। (সূরা বনি ইসরাইল : ২৫)

৩. বিশুদ্ধ তওবার কিছু বাস্তব পদক্ষেপ বা আমল করা অত্যাবশ্যক
ক. তাৎক্ষনিণ ঐ অন্যায় থেকে বিরত থাকা। কারণ ব্যক্তির মনে হতে পারে আচ্ছা যেহেতু অন্যায়টা শুরু করেই ফেলেছি তাহলে শেষ করি। এর পর তওবা করব। এতে কোনো ফায়দা হবে না। কারণ, সে তার নফস এর কাছে পরাজিত হয়েছে। তবে সে যদি তাৎক্ষণিক ঐ পাপা থেকে ফিরে আসতে পারে, তাহলে সে বরং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার মত সওয়াবের অধিকারী হবে। মহান আল্লাহ তার জন্য সেখান থেকে ফিরে আসার পথ প্রদর্শন করবেন বলে ওয়াদা করেছেন। তিনি বলেন:
وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا ۚ وَإِنَّ اللَّهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِينَ
যারা আমার জন্য সংগ্রাম-সাধনা করবে তাদেরকে আমি আমার পথ দেখাবো। আর অবশ্যই আল্লাহ সৎকর্মশালীদেরই সাথে আছেন৷ (সূরা আল আনকাবুত : ৬৯)

খ. ইসতিগফার করা
অর্থাৎ মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আন্তরিকভাবে ঠিকমত ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারলে মহান আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমা করবেন। এ ওয়াদা আল-কুরআনের অনেক স্থানে বিদ্যমান। সূরা হুদের ৯০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَاسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُوا إِلَيْهِ ۚ إِنَّ رَبِّي رَحِيمٌ وَدُودٌ
“দেখো, নিজেদের রবের কাছে ক্ষমা চাও এবং তাঁর দিকে ফিরে এসো। অবশ্যি আমার রব করুণাশীল এবং নিজের সৃষ্টিকে ভালোবাসেন।”
এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা সূরা আলে ইমরানের ১৩৩ নম্বর আয়াতে বলেন:
وَسَارِعُوا إِلَىٰ مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ
দৌড়ে চলো তোমাদের রবের ক্ষমার পথে এবং সেই পথে যা পৃথিবী ও আকাশের সমান প্রশস্ত জান্নাতের দিকে চলে গেছে, যা এমন সব আল্লাহভীরু লোকদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
তিনি ক্ষমার ব্যাপারে সূরা আল হাদিদের ২১ নম্বর আয়াতে আরো বলেন:
سَابِقُوا إِلَىٰ مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا كَعَرْضِ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ أُعِدَّتْ لِلَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ ۚ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ
দৌড়াও এবং একে অপরের চেয়ে অগ্রগামী হওয়ার চেষ্টা করো তোমার রবের মাগফিরাতের দিকে এবং সে জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি আসমান ও জমিনের মত। তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে সে লোকদের জন্য যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের প্রতি ঈমান এনেছে। এটা আল্লাহর অনুগ্রহ। যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। আল্লাহ বড়ই অনুগ্রহশীল।

গ. পরিবেশ এবং বন্ধুদের পরিবর্তন করা
অর্থাৎ যেসব বন্ধুর সাথে চলাফেরা করলে এবং যেসব পরিবেশে গেলে তওবাকারী আবারও অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে পারে, সেসব স্থান এবং ব্যক্তি পরিত্যাগ করা। কারণ বন্ধু দুই প্রকার। একজন হাত ধরে জান্নাতে নিয়ে যাবে, আরেকজন জাহান্নামে নিয়ে যাবে। সে দিন বন্ধু বন্ধুর শত্রু হয়ে যাবে। তারা একে অন্যকে বলবে তুমিই আমাকে পথভ্রষ্ট করেছো। তবে সেদিন মুত্তাকি বন্ধু এ কাজ করবে না। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন,
الْأَخِلَّاءُ يَوْمَئِذٍ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ إِلَّا الْمُتَّقِينَ
যখন সে দিনটি আসবে তখন মুত্তাকিরা ছাড়া অবশিষ্ট সব বন্ধুই একে অপরের দুশমন হয়ে যাবে। (সূরা যুখরুফ : ৬৭)
অসৎ বন্ধুদের নিয়ে সেদিন মানুষের আফসোসের সীমা থাকবে না। মহান আল্লাহ বলেন:
وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَىٰ يَدَيْهِ يَقُولُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُولِ سَبِيلًا﴾﴿يَا وَيْلَتَىٰ لَيْتَنِي لَمْ أَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِيلًا﴾﴿لَّقَدْ أَضَلَّنِي عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ إِذْ جَاءَنِي ۗ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِلْإِنسَانِ خَذُولًا
জালেমরা সেদিন নিজেদের হাত কামড়াতে থাকবে এবং বলতে থাকবে, “হায়! যদি আমি রাসূলের সহযোগী হতাম। হায়! আমার দুর্ভাগ্য, হায়! যদি আমি অমুক লোককে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করতাম তার প্ররোচনার কারণে আমার কাছে আসা উপদেশ আমি গ্রহণ করিনি মানুষের জন্য শয়তান বড়ই বিশ্বাসঘাতক প্রমাণিত হয়েছে। (সূরা আল ফুরকান: ২৭-২৯)

ঘ. ভালো কাজ করার জন্য মন্দ কাজের অনুসরণ করা। অর্থাৎ কোন মানুষ যখন অন্যায় এবং মন্দ কাজ করে তখন তা দেখে তার উল্টো কাজ করা। যেমন- ক) কোন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে, তওবাকারী তাকে সম্মান ও মর্যাদা দান করবে। খ) কেউ মন্দ পত্রিকা পাঠ করে, সে কুরআন, হাদিস ও ইসলামী সাহিত্য পাঠ করবে। গ) কোন ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে, তওবাকারী তা রক্ষা করার চেষ্টা করবে ঘ) কেউ গান-বাজনা এবং মন্দ আড্ডায় অংশগ্রহণ করে, তওবাকারী কোন উপকারী ইলমের দারসে অংশগ্রহণ করতে পারে।

ঙ) একমাত্র মহান আল্লাহর জন্য খালিস তওবা হতে হবে। কোন ভয়-ভীতি, অনিষ্ট এবং ক্ষতির আশঙ্কায় কোন অন্যায় থেকে বিরত থাকলে তা তওবা হিসেবে কবুল হবে না। যেমন কেউ পিতার অবাধ্য হলো এবং পিতা তার সন্তানকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করলো, তখন সে ব্যক্তি যদি অনুশোচনা করে তখন তা কবুল করা হবে না।

উপরোক্ত আলোচনার আলোকে এবং সামগ্রিকভাবে তওবার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত কিছু বিষয়ের অবগতি অত্যাবশ্যক। যেমন:
প্রথমত, প্রকৃতপক্ষে তওবা হচ্ছে কোন গোনাহের কারণে এ জন্য লজ্জিত হওয়া যে, তা আল্লাহর নাফরমানি। কোন গোনাহের কাজ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অথবা বদনামের কারণ অথবা আর্থিক ক্ষতির কারণ হওয়ায় তা থেকে বিরত থাকার সঙ্কল্প করা তওবার সংজ্ঞায় পড়ে না।

দ্বিতীয়ত, যখনই কেউ বুঝতে পারবে যে, তার দ্বারা আল্লাহর নাফরমানি হয়েছে, তার উচিত তৎক্ষণাৎ তওবা করা এবং যেভাবেই হোক অবিলম্বে তার ক্ষতিপূরণ করা কর্তব্য, তা এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয় ।

তৃতীয়ত, তওবা করে বারবার তা ভঙ্গ করা, তওবাকে খেলার বস্তু বানিয়ে নেয়া এবং যে গোনাহ থেকে তওবা করা হয়েছে বার বার তা করতে থাকা তওবা মিথ্যা হওয়ার প্রমাণ। কেননা, তওবার প্রাণসত্তা হচ্ছে কৃত গোনাহ সম্পর্কে লজ্জিত হওয়া কিন্তু বার বার তওবা ভঙ্গ করা প্রমাণ করে যে, তার মধ্যে লজ্জার অনুভূতি নেই। এ জন্য মহান আল্লাহ বলেছেন:
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِن قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا﴾﴿وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
তবে এ কথা জেনে রাখো, আল্লাহর কাছে তওবা কবুল হওয়ার অধিকার একমাত্র তারাই লাভ করে যারা অজ্ঞতার কারণে কোন খারপ কাজ করে বসে এবং তারপর অতি দ্রুত তওবা করে । এ ধরনের লোকদের প্রতি আল্লাহ আবার তাঁর অনুগ্রহের দৃষ্টি নিবন্ধ করেন এবং আল্লাহ সমস্ত বিষয়ের খবর রাখেন, তিনি জ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ। কিন্তু তওবা তাদের জন্য নয়, যারা খারাপ কাজ করে যেতেই থাকে, এমনকি তাদের কারো মৃত্যুর সময় এসে গেলে সে বলে, এখন আমি তওবা করলাম। অনুরূপভাবে তওবা তাদের জন্যও নয় যারা মৃত্যুর সময় পর্যন্ত কাফের থাকে। এমন সব লোকদের জন্য তো আমি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তৈরি করে রেখেছি। (সূরা আন নিসা : ১৭-১৮)

চতুর্থত, যে ব্যক্তি সরল মনে তওবা করে পুনরায় ঐ গোনাহ না করার সংকল্প করেছে মানবিক দুর্বলতার কারণে, যদি পুনরায় তার দ্বারা সেই গোনাহের পুনরাবৃত্তি ঘটে তাহলে এ ক্ষেত্রে পূর্বের গোনাহ পুনরুজ্জীবিত হবে না, তবে পরবর্তী গোনাহের জন্য তার পুনরায় তওবা করা উচিত।

পঞ্চমত, যখনই গোনাহর কথা মনে পড়বে তখনই নতুন করে তওবা করা আবশ্যক নয়। কিন্তু তার প্রবৃত্তি যদি পূর্বের পাপময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে আনন্দ পায়, তাহলে গোনাহের স্মৃতিচারণ তাকে আনন্দ দেয়ার পরিবর্তে লজ্জাবোধ সৃষ্টির কারণ না হওয়া পর্যন্ত তার বার বার তওবা করা উচিত। কারণ, যে ব্যক্তি সত্যিই আল্লাহর ভয়ে গোনাহ থেকে তওবা করেছে, সে অতীতে আল্লাহর নাফরমানি করেছে এই চিন্তা করে কখনো আনন্দ অনুভব করতে পারে না। তা থেকে মজা পাওয়া ও আনন্দ অনুভব করা প্রমাণ করে যে, তার মনে আল্লাহর ভয় শিকড় গাড়তে পারেনি।

আয়াতের নিম্নোক্ত অংশের ব্যাখ্যা
عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ
এখানে এ কথা বলা হয়নি যে, তওবা করলে তোমাদের অবশ্যই মাফ করে দেয়া হবে। এবং তোমাদেরকে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। বরং তাদের এই প্রত্যাশা দেয়া হয়েছে যে, যদি তোমরা সরল মনে তওবা করো তাহলে অসম্ভব নয় যে, আল্লাহ তোমাদের সাথে এই আচরণ করবেন। এর অর্থ হলো, গোনাহগার বান্দার তওবা কবুল করা এবং তাকে শাস্তি দেয়ার পরিবর্তে জান্নাত দান করা আল্লাহর জন্য ওয়াজিব নয়। বরং তিনি যদি মাফ করে দেন এবং পুরস্কারও দেন তাহলে তা হবে সরাসরি তার দয়া ও মেহেরবানি। বান্দার তাঁর ক্ষমালাভের আশা অবশ্যই করা উচিত। কিন্তু তওবা করলে ক্ষমা পাওয়া যাবে এই ভরসায় গোনাহ করা উচিত নয়। (তাফহিম)

يَوْمَ لَا يُخْزِي اللَّهُ النَّبِيَّ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ ۖ
মহান রব আখিরাতে তওবাকারী ব্যক্তিদের নবীদের এবং তাদের সাথে যারা থাকবেন তাদের কোনোভাবেই অপমান করবেন না। অর্থাৎ এ ধরনের নেক আমলকারী বান্দাদের উত্তম কার্যাবলির পুরস্কার নষ্ট করবেন না। কাফের মুনাফিকদের এ কথা বলার সুযোগ মোটেই দেবেন না যে, আল্লাহর বন্দেগি করে এসব লোক কী প্রতিদান লাভ করেছে? বরং লাঞ্ছনা, অপমান পতিত হবে বিদ্রোহী ও নাফরমানদের ভাগে। বিশ্বাসী ও অনুগতদের ভাগে তা পড়বে না। নবী করিম সা. এ অপমান থেকে বাঁচার জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন। বনু কিনানার একজন লোক বলেন, আমি মক্কা বিজয়ের দিন রাসূল সা. এর পেছনে সালাত আদায় করেছিলাম, আমি তাঁকে দু‘আয় বলতে শুনেছিলাম: ” اللَّهُمَّ لَا تُخْزِنِي يَوْم الْقِيَامَة ”
হে আল্লাহ কিয়ামতের দিন আপনি আমাকে অপদস্থ করবেন না। (মুসনাদে আহমাদ)

نُورُهُمْ يَسْعَىٰ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا ۖ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
পূর্বেই জানা গেছে মহান আল্লাহ মুমিনদের অপমান অপদস্থ করবেন না বরং তাদেরকে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নূর দেয়া হবে, যা তাদের সামনে ও ডান পাশে ধাবিত হবে। আর অন্যরা অন্ধকারে থাকবে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ সূরা

হাদিদের ১২ নম্বর আয়াতে বলেন:
يَوْمَ تَرَى الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ يَسْعَىٰ نُورُهُم بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِم بُشْرَاكُمُ الْيَوْمَ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ ذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
যেদিন তোমরা ঈমানদার নারী ও পুরুষদের দেখবে, তাদের ‘নূর’ তাদের সামনে ও ডান দিকে দৌড়াচ্ছে৷ (তাদেরকে বলা হবে) “আজ তোমাদের জন্য সুসংবাদ৷” জান্নাতসমূহ থাকবে যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহিত হতে থাকবে। যেখানে তারা চিরকাল থাকবে। এটাই বড় সফলতা।
সুতরাং এ কথা স্পষ্ট হয় যে, ঈমানদারগণ যখন হাশরের ময়দান থেকে জান্নাতের দিকে যেতে থাকবেন তখনই তাদের আগে আগে ‘নূর’ অগ্রসর হওয়ার এই ঘটনা ঘটবে। সেখানে চারদিকে থাকবে নিকষ কালো অন্ধকার। যাদের জন্য দোজখের ফয়সালা হবে তারাই কেবল সেখানে অন্ধকারে ঠোকর খেতে থাকবে। আলো কেবল ঈমানদারদের সাথেই থাকবে। সেই আলোর সাহায্যে তারা পথ অতিক্রম করতে থাকবে।

সেদিন মুনাফিক নারী-পুরুষ আর্তনাদ করবে, অনুরোধ করবে একটু দাঁড়াও! আমরা তোমাদের আলোকচ্ছটায় তোমাদের সাথে যাই। তাদের এ আবেদন নিষ্ফল হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে মহান রবের ঘোষণা:
يَوْمَ يَقُولُ الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ لِلَّذِينَ آمَنُوا انظُرُونَا نَقْتَبِسْ مِن نُّورِكُمْ قِيلَ ارْجِعُوا وَرَاءَكُمْ فَالْتَمِسُوا نُورًا فَضُرِبَ بَيْنَهُم بِسُورٍ لَّهُ بَابٌ بَاطِنُهُ فِيهِ الرَّحْمَةُ وَظَاهِرُهُ مِن قِبَلِهِ الْعَذَابُ
সেদিন মুনাফিক নারী-পুরুষের অবস্থা হবে এই যে, তারা মু’মিনদের বলবে, আমাদের প্রতি একটু লক্ষ কর যাতে তোমাদের ‘নূর’ থেকে আমরা কিছু উপকৃত হতে পারি৷ কিন্তু তাদের বলা হবে, পেছনে চলে যাও৷ অন্য কোথাও নিজেদের ‘নূর’ তালাশ কর৷ অতঃপর একটি প্রাচীর দিয়ে তাদের মাঝে আড়াল করে দেয়া হবে৷ তাতে একটি দরজা থাকবে৷ সে দরজার ভেতরে থাকবে রহমত আর বাইরে থাকবে আজাব। (সূরা আল হাদিদ : ১৩)

এই নাজুক পরিস্থিতিতে অন্ধকারে হাতড়িয়ে বেড়ানো লোকদের আর্তনাদ ও বিলাপ শুনে শুনে ঈমানদারদের ওপর হয়তো ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে থাকবে এবং নিজেদের ত্রুটি-বিচ্যুতির কথা স্মরণ করে তারাও আশঙ্কা করতে থাকবে যে, তাদের ‘নূর’ আবার ছিনিয়ে নেয়া না হয় এবং দুর্ভাগাদের মত তাদেরকেও অন্ধকারে হাতড়িয়ে মরতে না হয়। তাই তারা দোয়া করতে থাকবে, হে আমাদের রব, আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দাও এবং জান্নাতে না পৌঁছা পর্যন্ত আমাদের ‘নূর’কে অবশিষ্ট রাখ। ইবনে জারির হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসের উক্তি উদ্ধৃত করেছেন যে, (رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا) এর অর্থ হচ্ছে, যতক্ষণ তারা সহি সালামতে পুলসিরাত অতিক্রম করে না যায় ততক্ষণ যেন তাদের নূর অবশিষ্ট থাকে এবং নিভে না যায়। তবে যারা ঈমানওয়ালা হবে আল্লাহর অসীম রহমতে তাদের নূর নিভে যাবে না। নবী করিম সা. তাঁর উম্মতদের ঠিকই চিনতে পারবেন এবং তাদের নূর তাদের সাথে জান্নাত পর্যন্ত যাবে। এ ব্যাপারে একটি হাদিস হচ্ছে:
وَأَعْرِفُهُمْ يُؤْتَوْنَ السُّجُود وَأَعْرِفهُمْ بِنُورِهِمْ يَسْعَى بَيْن أَيْدِيهمْ ” .
আমি সেখানে আমার উম্মতের নেককার লোকদের তাদের নূরের সাহায্যে চিনতে পারবো, যে নূর তাদের সামনে ডানেও বাঁয়ে দৌড়াতে থাকবে। (হাকেম, ইবনে আবী হাতেম, ইবনে মারদুইয়া)।

দয়াময় মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে তওবা নাসুহা নসিব করুন এবং পুলসিরাত অতিক্রমের সময় পর্যাপ্ত নূর দান করে সহজে জান্নাতে যাওয়ার তাওফিক দিন।